জাল সনদে চাকরি করছেন বেসরকারি স্কুল–কলেজের দেড় শতাধিক শিক্ষক।
বেসরকারি স্কুল-কলেজের দেড় শতাধিক শিক্ষকের জাল সনদ চিহ্নিত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর। এই জাল সনদ দিয়ে এসব শিক্ষকেরা এমপিওভুক্তি নিয়েছেন। সেই সঙ্গে আরও এক হাজারের বেশি শিক্ষকের সনদ নিয়েও চলছে তদন্ত। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, এসব শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুষ্টিয়ার উজানপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ইয়াছমিন নাহার। ১০ বছরের বেশি সময় ধরে চাকরি করছেন তিনি। তবে তাঁর নিবন্ধন সনদ জাল বলে প্রমাণিত হয়েছে। পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের তদন্তে এই তথ্য উঠে এসেছে। তবে অভিযুক্ত শিক্ষক বলছেন, তিনি ক্লাস-পরীক্ষা দিয়েই সনদ নিয়েছেন।
ইয়াসমিন নাহার বলেন, ‘কোর্স করেছি। এরপর তারা আমাদের সনদ দিয়েছে। কিন্তু তারা কি দিল, সেটা তো আর আমরা জানি না।’
নোয়াখালীর হাট পুকুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী গ্রন্থাগারিক দীপক চন্দ্র দে। তাঁরও নিবন্ধনের সনদ জাল প্রমাণিত হয়েছে। তবে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলছেন, তাঁর সনদ যাচাই-বাছাই করেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
মোহাম্মদ হানিফ বলেন, ‘জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমেই নিরীক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে তাঁর সনদ পাঠানো হবে।’
এমন ১৫৬ জন শিক্ষকের সনদ জাল বলে প্রমাণ পেয়েছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের ২৯ জন, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ১০ জন, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১০০ জন এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ১৭ জন শিক্ষকের সনদ জাল। এর বেশির ভাগই এনটিআরসিএ এবং কম্পিউটারের জাল সনদ দিয়ে এমপিও নিয়েছেন।
পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক বিপুল চন্দ্র সরকার ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনকে বলেন, জাল সনদের বিষয়ে তদন্ত একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। এটি চলমান রয়েছে। আমরা মনে করি, এমন অনিয়মের সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে এ অভিযান অব্যাহত আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, এসব শিক্ষকের বেতনের অর্থ ফেরত দিতে হবে। সেই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘আমরা মনে করি, প্রতারণা যদি হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের দণ্ডবিধি অনুসারে পুলিশি ব্যবস্থা হওয়া উচিত।’
এর আগে আরও ৬৭৮ জন শিক্ষকের জাল সনদ চিহ্নিত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।