আহলান সাহলান মাহে রমজান,
পবিত্র রমজানের পবিত্রতা রক্ষা করার মাধ্যমে আল্লাহ্ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। সকল অ্যালামনাই ইঞ্জিনিয়ার্স এবং বর্তমান শিক্ষার্থীদের এক হওয়ার মাধ্যমে আমাদের মাঝে সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ বৃদ্ধিপাক। আল্লাহ্ যেনো আমাদের ইফতার মাহফিল কে কবুল করে নেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন:
﴿ يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ كُتِبَ عَلَيْكُمُ الصِّيَامُ كَمَا كُتِبَ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِكُمْ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ ﴾ [البقرة:183].
হে মুমিনগণ, তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেভাবে ফরয করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। যাতে তোমরা তাকওয়া অবলম্বন কর।’ -সূরা বাকারা, ১৮৩ আয়াত
রমজান মাসের আগমনে মুসলিমগণ আনন্দ প্রকাশ করে থাকেন। আনন্দ প্রকাশ করাই স্বাভাবিক স্বতঃস্ফূর্ততা। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন :—
قُلْ بِفَضْلِ اللَّهِ وَبِرَحْمَتِهِ فَبِذَلِكَ فَلْيَفْرَحُوا هُوَ خَيْرٌ مِمَّا يَجْمَعُونَ (يونس: 58)
বল, এটা আল্লাহর অনুগ্রহ ও তাঁর দয়ায়। সুতরাং, এতে তারা আনন্দিত হোক। তারা যা সঞ্চয় করে এটা তার চেয়ে উত্তম। -সূরা ইউনুস : ৫৮
পার্থিব কোন সম্পদের সাথে আল্লাহর এ অনুগ্রহের তুলনা চলে না। করা হলে, তা হবে এক ধরনের অবাস্তব কল্পনা। যখন রমজানের আগমন হত তখন রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অতিশয় আনন্দিত হতেন, তার সাহাবাদের বলতেন :—
أتاكم رمضان شهر مبارك
তোমাদের দ্বারে বরকতময় মাস রমজান এসেছে। এরপর তিনি এ মাসের কিছু ফজিলত বর্ণনা করে বলতেন :—
فرض الله عز وجل عليكم صيامه، تفتح فيه أبواب السماء، وتغلق فيه أبواب الجحيم، وتغل فيه مردة الشياطين، لله فيه ليلة خير من ألف شهر، من حرم خيرها فقد حرم. رواه النسائي
আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য সিয়াম পালন ফরজ করেছেন। এ মাসে আকাশের দ্বারসমূহ খুলে দেয়া হয়। বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো। অভিশপ্ত শয়তানকে বন্দি করা হয়। এ মাসে রয়েছে একটি রাত যা হাজার রাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। যে ব্যক্তি এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো সে মূলত সকল কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হল। -নাসায়ী
সিয়াম আগুন থেকে রক্ষাকারী ঢাল:
ইমাম আহমাদ রহ. তার কিতাবে জাবের রা. থেকে হাদিস বর্ণনা করেছেন, নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন:
{ إنما الصيام جنة، يستجنّ بها العبد من النار }.
সিয়াম প্রবৃত্তির তাড়না থেকে বাঁচার জন্য ঢাল। এর মাধ্যমে বান্দা আগুন থেকে মুক্তি পায়।
ইবনে মাসউদ রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন:
{يا معشر الشباب من استطاع الباءة فليتزوج، فإنه أغض للبصر وأحصن للفرج، ومن لم يستطع فعليه بالصوم، فإنه له وجاء } [أخرجه البخاري ومسلم].
হে যুবকেরা! যে সামর্থ রাখে সে যেন বিবাহ করে। কেননা, তা দৃষ্টিকে সংরক্ষণ করে এবং যৌনাঙ্গের হিফাজত করে। যে বিবাহের সামর্থ রাখে না সে যেন সিয়াম পালন করে। কেননা এটি তার জন্য সুরক্ষা। -বুখারী মুসলিম
সিয়াম জান্নাতের পথ:
ইমাম নাসাঈ রহ. আবু উমামা রা. থেকে বর্ণনা করেন, তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লামকে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল আমাকে এমন বিষয়ের নির্দেশ দেন যার মাধ্যমে আল্লাহ আমাকে প্রতিদান দেবেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলইহি অসাল্লাম বলেন:
{ عليك بالصيام فإنه لا مثل له }.
তুমি সিয়াম পালন কর। কেননা এর কোন তুলনা নেই।
জান্নাতে একটি দরজা রয়েছে। সেখান দিয়ে শুধু সিয়াম পালনকারী প্রবেশ করবে। সাহল ইবনে সাআদ রা. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন:
{ إن في الجنة باباً يقال له: الريّان، يدخل منه الصائمون يوم القيامة، لا يدخل منه أحد غيرهم، يقال: أين الصائمون، فيقومون، لا يدخل منه أحد غيرهم، فإذا دخلوا أغلق، فلم يدخل منه أحد } [أخرجه البخاري ومسلم].
জান্নাতে একটি দরজা আছে যার নাম রাইয়ান। কিয়ামত দিবসে সেখান দিয়ে সিয়াম পালনকারী প্রবেশ করবে। সে দরজা দিয়ে অন্য কেহ প্রবেশ করবে না। বলা হবে: সিয়াম পলনকারী কোথায়? তারা দাঁড়াবে, তারা ছাড়া আর কেহ প্রবেশ করবে না। তারা প্রবেশ করার পর দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। আর কেহ সে স্থান দিয়ে প্রবেশ করবে না। -বুখারী মুসলিম, ১৮৯৬
সিয়াম পালনকারীর জন্য সিয়াম সুপারিশ করবে:
ইমাম আহমদ রহ. আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস রা. থেকে বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম বলেন:
{ الصيام والقرآن يشفعان للعبد يوم القيامة، يقول الصيام: أي رب منعته الطعام والشهوات بالنهار فشفّعني فيه، ويقول القرآن: منعته النوم بالليل فشفّعني فيه، قال: فيشفعان }.
সিয়াম এবং কুরআন বান্দার জন্য কিয়ামত দিবসে সুপারিশকারী হবে, সিয়াম বলবে, হে প্রভু আমি তাকে দিনের বেলায় খাওয়া এবং প্রবৃত্তির তাড়না থেকে নিবৃত্ত রেখেছি, তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন। কোরআন বলবে, আমি তাকে রাত্রের ঘুম থেকে বিরত রেখেছি, তার ব্যাপারে আমার সুপারিশ গ্রহণ করুন, আল্লাহ তাআলা বলবেন: তাদের সুপারিশ গ্রহণ করা হল।
সিয়াম গুনাহের ক্ষমা এবং কাফফারা হিসাবে গৃহিত হয়:
কেননা ভাল কাজ অন্যায়কে মুছে দেয়। আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহ তাআ’লা আনহু রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন:
{ من صام رمضان إيماناً واحتساباً غفر له ما تقدم من ذنبه } [رواه البخاري ومسلم].
যে রমজানে ঈমান এবং এহতেসাবের সাথে সিয়াম পালন করবে, আল্লাহ তার পূর্বের গোনাহ মাফ করে দেবেন। -বুখারী মুসলিম
সিয়াম ইহকাল এবং পরকালের সৌভাগ্যের কারণঃ
আবু হুরাইরা রাদিআল্লাহ তাআ’লা আনহু রাসূলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন:
{وللصائم فرحتان: فرحة حين يفطر، وفرحة حين يلقى ربه، ولخلوف فم الصائم أطيب عند الله من ريح المسك } [رواه البخاري ومسلم].
সিয়াম পালনকারীর দুটি খুশি, প্রথম খুশি যখন সে ইফতার করে, আর এক খুশি যখন সে তার রবের সাথে সাক্ষাৎ করবে। সিয়াম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট মিশক আম্বরের চেয়ে অধিক প্রিয়। -বুখারী মুসলিম
প্রিয় ইউ আই টি এস এলামনাই ইঞ্জিনিয়ার্স এবং বর্তমান শিক্ষার্থীগণ , অত্যন্ত আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, আগামী ২২ সে মার্চ রোজ শুক্রবার (১০ই রমজান বিকেল ৫:৩০ ঘটিকা) UITS সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এলামনাই এসোসিয়েশন ও UITS সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ক্লাব এর উদ্যোগে এক ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
উক্ত ইফতার মাহফিলে আপনার/আপনাদের উপস্থিতি কামনা করছি।
স্থান: ইউ আই টি এস স্থায়ী ক্যাম্পাসের পি এইচ পি স্কয়ার, নয়া নগর, বারিধারা, ঢাকা.