Site icon The Daily Global News

হালকা Dunki কথন…

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষে পড়াকালীন জাতীয় টেলিভিশন বিতর্কের দ্বিতীয় রাউন্ডে বিতর্কের বিষয় ছিল, ‘‘মুক্তবাজার অর্থনীতির বিরোধিতা নয় বরং শ্রমের অবাধ স্থানান্তর আইন সিদ্ধ করা উচিত’’! (২০০৪ সালের টপিক মনে আছে কিভাবে, এই প্রশ্ন আপনার মাথায় আসলে জানিয়ে রাখি আমার ক্লাস সিক্সের বিতর্কের বিষয়ও মোটামুটি সবগুলো আমার মনে আছে)

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কোন হল মনে করতে পারছি না) কাছে আমার টিম হেরে যায় ১.৪৯ ব্যবধানে! শ্রমের অবাধ স্থানান্তরের পক্ষে বিতর্ক করেছিলাম! Dunki চলচ্চিত্র মূলত এই বিষয়কে স্বরাঘাত করেই নির্মিত হয়েছে! হিরানি মহোদয় আমাদের বিতর্ক দেখে কনসেপ্ট বেছে নিলেন কিনা, সেই তর্কে যাচ্ছি না! তিনি আমার ভীষণ প্রিয় একজন পরিচালক।গত কয়েকবারে মত বরাবর মুভির প্রথমার্ধের প্রায় শেষ প্রান্তে যেয়ে মুভি দেখা শুরু করেছি। মন খারাপ নিয়েই দেখলাম! পুরো চলচ্চিত্র না দেখে আমাদের মত সাধারণ মানুষের কথা বলাই উচিত না! তারপরও বলছি, এই জনরার চলচ্চিত্র ইদানীং বলিউডে খুব যাচ্ছে না। গত কয়েক বছরের মূলধারার চলচ্চিত্র মূলত অ্যাকশন বেইজড! একজন সাধারণ দর্শক হিসেবে Dunki একটা সুন্দর ধীর, স্থির চলচ্চিত্র মনে হয়েছে! চলচ্চিত্রে খুব ত্বরা ছিল না।

সবাই যার যার চরিত্রে যথাযথ প্রচেষ্টা চালিয়েছেন, ভিকি কৌশলের কয়েকটা সিন পেয়েছি, কী দুর্দান্ত মুখভঙ্গি! শাহরুখ খান চরিত্রের ভেতরে যেয়ে কান্না করার পর শেষ মুহূর্তে আবার দেবদাস, কাভি খুশি কাভি গাম, কুচ কুচ হোতা হ্যায়’র চরিত্রের কান্না ফিরিয়ে নিয়ে আসেন, অবশ্য এত ভাঙা আর কিভাবে ভাঙবেন তিনি। বরাবরের মতই দুর্দান্ত চেষ্টা ছিল। জওয়ানের পর থেকে বুড়া শাহরুখকেই ভাল লাগছে, বয়সের সাথে যাচ্ছে বিধায় কিনা জানি না! এই সময়ে এসে জোর করে মেকাপের সহায়তায় তরুণ বিষয়টি আর যাচ্ছে না! তাপসী পান্নুকে পিংক, নাম হ্যায় শাবানা, বাদলাতে দুর্দান্ত ভাল লেগেছে। কেন যেন তাকে এমন চরিত্রেই ভাল মানায়, রোম্যান্স ও রসায়নের জায়গা যেটুকুই এই চলচ্চিত্রে এসেছে তাতে তার জায়গায় বারবার কারিনা কাপুরকে ভাবছিলাম! তাপসী অসাধারণ কাজ করেন তা সত্ত্বেও রসায়ন ঠিক জমেনি!

পরিচালক বয়স্ক ও বয়স্কা শাহরুখ ও তাপসীকে চেহারায় বয়সের ছোঁয়া তো দিয়েছেন কিন্তু শাহরুখের শরীর যেরুপ ৪০ বছর বয়সীদের ন্যায় তরতাজা ছিল সেটা বেখাপ্পা লেগেছে! (গলা থেকে বুক ও হাতে মেকাপ করতে ভুলে গেলেন কিনা)! তাপসী পান্নুর ক্ষেত্রেও একই অবস্থা ছিল। পরিচালক থ্রি ইডিয়টস ও মুন্না ভাই এমবিবিএস বানিয়ে যে হাইপ তুলেছিলেন, আমাদের মত সাধারণের প্রত্যাশা বেশি থাকবে সেটা খুব স্বাভাবিকও! তবে সময় একটা বিশাল ফ্যাক্ট! এই চলচ্চিত্র আরও কয়েক বছর আগে মুক্তি পেলে জমে ক্ষীর হয়ে যেতো! ফিল্মে কারো কারো কমিক টাইমিং দারুণ লেগেছে, কারোটা মোটামুটি লেগেছে। মানুষকে হাসানো আসলেই খুব কঠিন কাজ!

সবশেষ কথা, Dunki মুভি ১-২ বার দেখার মত চলচ্চিত্র! মনযোগী দর্শক হয়ে দেখলে আপনার ভাল লাগবে! এই চলচ্চিত্রের চলচ্চিত্রকার ও অভিনয়শিল্পীদের নিয়ে বলার যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও কিছু কথা বলেই ফেললাম

লেখক : এডিসি, ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড ফোর্স ডিভিশন।

(লেখকের ফেসবুক পেজ থেকে সংগৃহীত)

Exit mobile version